ঢাকা অফিসঃ
কৃষককে ঋণপ্রদানে সহজিকরণ করার নামে জারিকৃত নতুন সার্কুলারে উল্টো বিপাকে পড়েছে কৃষকেরা। বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
এমতাবস্থায় কৃষকেরা ফসল/শস্য ঋণ নেওয়ার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন বলেও ধারনা করছেন অনেকে।
রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক কৃষকদের কৃষি কাজে সহায়তা করার লক্ষ্যে ঋণ প্রদান করে আসছিল। ব্যাংকের সার্কুলার নং ২/২০১৮ অনুসারে কৃষকেরা ঋণগ্রহণ করে যথানিয়মে পরিশোধ ও অন্যান্য সকল কার্যক্রম পরিচালিত হলেও গত ২৪/২/২০২২ তারিখে নতুন সার্কুলার ২/২০২২ জারি করা হয়। সার্কুলার নং ২/২০২২ এর আলোকে কৃষকদের ঋণ সহায়তা প্রদানের নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু নতুন জারিকৃত এই সার্কুলারে কৃষকদের ঋণ নবায়ন থেকে শুরু করে নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। কৃষকেরা বলছেন এই নিয়মানুযায়ী কৃষকেরা ঋণ নিতে পারবেন না। পুরোপুরি ঋণ পরিশোধ করার পর নতুন ঋণ নেওয়া অনেক কৃষকের পক্ষে সম্ভব নয়। বিশেষ করে যারা বন্যা, খরা সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত, এমন কৃষকরা পুরো ঋণ পরিশোধ করে ঋণ নিতে হলে তাকে জমি কিংবা গরু ছাগল বিক্রি করতে হবে। এ অবস্থায় ব্যাংকের কোন সুবিধা তার কোন কাজে আসবে না।
রাকাব এর ভোক্তা কৃষক আমিরুল ইসলাম মিন্নু ও রফিকুল ইসলাম বলেন, ১৯৮৩ সাল থেকে আমি রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের কার্যক্রমে জড়িত। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার কৃষক বান্ধব সরকার। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যে নতুন সার্কুলার জারি করেছে তাতে অসহায় কৃষক টাকা পরিশোধ করতে নিজের গরু,ছাগল বিক্রি অথবা জমি বন্ধক রেখে টাকা পরিশোধ করতে হবে। অথবা কারো নিকট দৈনিক লাভের বিনিময়ে ধার নিতে হবে যা কৃষকের বেলায় মরার ওপর খাড়ার ঘা এর মতো মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। অথচ বড় বড় ব্যবসায়ী সিসি লোনীরা শুধুমাত্র সুদের টাকা পরিশোধ করে তাদের ঋণ নবায়ন ও বৃদ্ধি করতে পারে যা কৃষকদের সুদেআসলে আগেরদিন পরিশোধ করে পরেরদিন নিতে হয়।
এ ব্যাপারে কৃষক বান্ধব সরকার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহানুভূতি একান্ত ভাবে কামনা করেন তিনি।
অন্যদিকে ব্যাংকটির উর্ধতন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নানা অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগও উঠেছে নানা মহলে। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের অদূরদর্শিতা ও অব্যবস্থাপনায় মঞ্জুরীকৃত বৃহৎ বৃহৎ বেশ কিছু ঋণ খেলাপীঋণে পরিণত হয়েছে যা আদায়ের সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। সে কারণে ব্যাংকটির শ্রেণিকৃত ঋণের হার আশংকাজনক এবং অন্য ব্যাংকের চেয়ে অনেক বেশি।
অন্যান্য ব্যাংক তাদের কর্মকর্তা-কর্গমচারিকে যে সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসছে রাকাবে তার ব্যত্যয় ঘটছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে একজন সিবিএ নেতা বলেন, শুক্রবার ও শনিবার এমনকি বন্ধের দিনেও সার্ভার খোলা রেখে কাজ করার নির্দেশ আসে বিনা পারিশ্রমিকে বা কোন পারিশ্রমিক ছাড়া। যেখানে অন্যান্য ব্যাংক সাপ্তাহিক ছুটি বা অন্য ছুটির দিনে স্টাফদের দ্বারা কাজ করিয়ে নিলে নির্দিষ্ট ভাতা বা সম্মানি দিয়ে থাকে সেখানে বর্তমান এমডি মোঃ আব্দুল মান্নান অমানবিকভাবে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করিয়ে নিচ্ছেন। এমনকি ঋণ আদায় ও বিতরণ কাজে নিয়োজিত স্টাফদের ন্যায্য প্রাপ্য দৈনিক ভাতা/ডিএ তিনি বাতিল করেছেন। কৃষকদের সুবিধা বা ব্যাংকারদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিবিএ মিটিং করলে ব্যাংকারদের তৎক্ষনাৎ শাস্তিমূলক বদলী ও স্ট্যান্ড রিলিজ করেন।
এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান কার্যালয়ে রাজত্ব কায়েম করা এবং মাঠপর্যায়ে কাজের দক্ষতাবিহীন একটি সুবিধাবাদি চক্র রনজিৎ কুমার সেন ও শওকত শহিদুল(বিএনপিপন্থী সংগঠন অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি) গং সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ জড়িত থাকার নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। সর্বস্তরের কৃষক ও মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং সেই সাথে বঙ্গন্ধুর সোনার বাংলায় রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক রক্ষা সহ কৃষকবান্ধব সার্কুলার জারির মাধ্যমে কৃষকদের প্রকৃত বন্ধু হিসাবে প্রতিষ্ঠার দাবী জানান।
এবিষয়ে রাকাবের বৃহস্পতিবার দুপুর ৩ টায় রাকাবের এমডি মোঃ আব্দুল মান্নান এর 01712009470 মুঠোফোনে কথা বলতে চাই লে তিনি বোর্ড মিটিংয়ে আছেন বলে জানিয়েছেন।