মোঃ রফিকুল হাসান রন্জু ,ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) উপজেলা প্রতিনিধি:
ভূরুঙ্গামারী উপজেলার জয়মনিরহাট ইউনিয়নের সড়ককাটা এলাকার পশ্চিমে ফুলকুমার নদের উপর একটি ব্রীজের অভাবে ধুকছে চার গ্রামের মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভূরুঙ্গামারী ও নাগেশ্বরী উপজেলার সংযোগ স্থল জয়মনিরহাট ইউনিয়নের শিংঝাড় গ্রামকে চিরে বেড়িয়ে গেছে ফুলকুমার নদটি। সড়ককাটা অংশে রয়েছে ঢাকা-ভূরুঙ্গামারী মহাসড়ক ধরে তাবৎ পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ অন্য পাড়ে গড়ে উঠেছে শিংঝাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় , আজমাতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আজমাতা উচ্চ বিদ্যালয় ,শিংঝাড় দাখিল মাদ্রাসা এবং বিজিবি’র সীমান্ত ফাঁড়ীর মত গুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠান । এই প্রতিষ্ঠান গুলিতে প্রতিদিন যাতায়াত করে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী ,শিক্ষক শ্রমজীবি সাধারণ মানুষ এবং সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বিজিবি’র সদস্যরা। গ্রামবাসী নিজেদের প্রয়োজনেই প্রায় প্রতি বছর স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে গ্রাম থেকে বাঁশ সংগ্রহ করে নির্মান করে বাঁশের জাকলা কিন্তু সেই জাকলা দুই বছরের বেশি টেকসই না হওয়ায় কষ্টের সীমা থাকেনা তাদের । নিজেদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে খরচ হয় দ্বিগুন। অগুনিত ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এতদিন তারা করে গেছেন কাজটি কিন্তু আর পারছেন না বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।পূর্ব পাড়ের শাহজাহান আলী খন্দকার , মোসলেম উদ্দিন ,দুলাল হোসেন ,আঃ মালেক ওমর আলী বলেন গত বছর দাতাদের বাঁশ এবং গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমের পরেও খরচ হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা। সে টাকা জোগার করতে হাত পাততে হয়েছে দুয়ারে দুয়ারে । ধর্ণা দিতে হয়েছে রথি মহারথিদের দরবারে তারপরও আছে উদ্যোমী লোকের অভাব।ওপারের বিচ্ছিন্ন দ্বীপে সংযোগহীন জীবন যাপন করছেন চাকুরী জীবনে সৎ এবং নিষ্ঠাবান তকমা পাওয়া সাবেক সচিব আলেফ উদ্দিন, বর্তমান জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ , প্রথিতযশা প্রধান শিক্ষক কাজিম উদ্দিন সরকার এবং অনেক নামী দামী মানুষ। যাদের অহংবোধ আরো দীর্ঘমেয়াদী করেছে চার গ্রামের মানুষের কষ্টকর চলাচল এবং দূর্ভোগ।
পশ্চিম পাড়ের সাবেক সেনা সদস্য জমসের আলী মন্ডল , আলহাজ আশরাফ আলী ,রমিজ উদ্দিন জানান, স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যবধি এই বাঁশের জাকলা দেখতে এসে ব্রীজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন বহু এমপি ,উপজেলা চেয়ারম্যান , পাঁচ বছর পরপর যে স্থানীয় নির্বাচন হয় সে নির্বাচনের সকল প্রার্থীরই নির্বাচনী এজেন্ডায় থাকে আরফান হাজীর ঘাটের এই ব্রীজটির নাম। নির্বাচন পেরিয়ে গেলেই হারিয়ে যায় সব এজেন্ডা, ভুলে যান সকল নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি।
এপারে খামার আন্ধারীঝাড় ,আই কুমারী ভাতি ওপারে শিংঝাড় , আজমাতা মাঝখানে ফুলকুমার নদ- সংযোগহীনতার ইতিহাসকে স্বাক্ষী রেখে একটি ব্রীজের দাবীতে যে কোন ধরণের ত্যাগ স্বীকারে রাজী কৃষি প্রধান এ এলাকার মানুষ।
জয়মনিরহাট ইউপির চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) হাফিজুর রহমান বলেন, ইতিপূর্বে এই ঘাটে একটি ব্্রীজ নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এতে কোন ফল না পাওয়ায় আবারো আমরা ইউনিয়ন পরিষদের পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে আলোচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করবো।
উপজেলা চেয়ারম্যান নূরুন্নবী চৌধুরী বলেন, দুই উপজেলার মাঝখান দিয়ে নদটি বয়ে যাওয়ায় এখানে একটি ব্রীজ করতে সমস্যা হচ্ছিল তার পরেও আমরা এলজিইডির মাধ্যমে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছি। যত দ্রুত সম্ভব ব্রীজটি নির্মান করার জন্য সজাগ দৃষ্টি রাখছি।
Leave a Reply