স্টাফ রিপোর্টারঃ
কদম বর্ষাকালের ফুল। বাংলাদেশের আলোচিত ওজনপ্রিয় ফুল। আদীকাল থেকেই কদমএদেশের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে । কবিতা,গান, সাহিত্য উপমায় এই ফুলের ছড়াছড়ি।
প্রাচীন বৈষ্ণব সাহিত্য, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও জসীম উদ্দিনের রচনায় কদম ফুলের সরব উপস্থিতি। রাধাকৃষ্ণের প্রেমনিলা বর্ষার ফুলে ভরা কদম তলায় পরিতিপ্ততা এনেছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে কদম ফুল পবিত্র।
অনিষ্টের হাত থেকে রক্ষা, দেবতা তুষ্টে, রাখি বন্ধনে সোলা (জলজ উদ্ভিদ ) দিয়ে তৈরি এই ফুলের প্রতিচ্ছবি ব্যবহার করা হয়। বর ওকনের মাথার টোপরে এই ফুলের প্রতিচ্ছবি ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাচিনকাল থেকে।
বর্ষার সৌন্দর্য কদম ফুলের সাথে মিশে একাকার। মেঘের গর্জন ও বর্ষার প্রকোপ যত বেশী কদম ফুলের সৌন্দর্য তত বেশী মোহনীয় হয়ে ধরা পড়ে । বর্ণে, গন্ধে সৌন্দর্যে বর্ষার অন্যতম ফুল কদম। হলদে শরীর নিয়ে সাদা সাদা বৃষ্টির ফোটার মত পাঁপড়ী নিয়ে ফোটা মিষ্টি সুগন্ধযুক্ত ফুটে থাকা ফুল গোলাকার আকৃতির। এটি একটি মাত্র ফুল মনে হলেও আসলে ইহা অনেক ফুল গুচ্ছের সমাহার।
ফুলের পাঁপড়ীর মাথায় থাকে সাদা রঙের মুকুট। ফুলের ভিতরে থাকে ফল। পাঁপড়ী ঝড়ে ফলের আকৃতি গোলাকার বলে পরিনত হয়। ইহা স্বাদে টক, বাদুর, কাঠবিড়ালি এই ফল খেয়ে থাকে। গাছ লম্বা ও বড় আকারের হয়। কান্ড সোজা গাছের ছাল অসংখ্য ফাটলে বিভক্ত থাকে।
বসন্তে গাছে কচিপাতা আসে, বর্ষায় পুষ্ট হয়। পাতা ডিম্বাকৃতির ও তেল চকচকে। শীতকালে হলুদ রং হয়ে পাতা ঝড়ে পড়ে গাছ ন্যাড়া হয়। গ্রামের অগভীর জঙ্গলে, রাস্তার ধারে ও বাড়ীর আশে পাশে এখনও গুটিকয়েক কদম গাছ চোখে পড়ে।
বর্ষায় ফুলে ভরা কদম গাছ দেখতে অতুলনীয় সুন্দর। গাছের কান্ড নরম ও এর আর্থিক মূল্য আছে।
দেয়াশলাই ও প্যাকেটিং বাস্কে এর ব্যবহার হয়।
ইহা ছাড়াও মানুষ জ্বালানি হিসাবে এটা ব্যবহার করে। কদম গাছের বাকল জ্বরে উপকারী।
পাতার রস ছোটদের কৃমি নাশক। শেতীসহ বিভিন্ন রোগে কবিরাজরা এই গাছের পাতা ও ছাল ব্যবহার করেন। ঘোগারকুটি গ্রামের মোঃ শামীম কবীর বুলবুল বলেন, কদম ফুল সৌন্দর্য্যে সেরাই নয় এই ফুলের গাছের আর্থিক মূল্যও আছে। এখনও ঢাকা থেকে ব্যবসাযীরা এসে এই গাছ কিনে নিয়ে যান।কদম গাছ রক্ষা করা আমাদের সকলের কর্তব্য।
অবাধে কেটে ফেলায় সবুজ পাতার মধ্যে চিরচেনা কদম ফুল এখন তেমন চোখে পড়ে না।কদম ছাড়া বর্ষার রুপ কল্পনা করা যায় না।
কদম বাংলাদেশের বর্ষার অহংকার। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা ও ঐতিহ্য রক্ষায় সরকারি -বেসরকারী ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে কদম গাছ রোপন করা প্রয়োজন।
Leave a Reply