স্টাফ রিপোর্টারঃ
কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের নওদাবস(শল্লীধরা) গ্রামের কয়েক জন সহজ সরল কৃষক প্রতারণার শিকার হয়ে জেল খাটছেন। প্রতারণার শিকার হওয়া কৃষকরা হচ্ছেন- রনজিত কুমার(৩৭) পিতা-মৃত- রজনী কান্ত রায়, প্রভাস চন্দ্র রায় (৪৩) পিতা-মৃত- প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, সুবল চন্দ্র মহন্ত (৩২) পিতা- সুবাস চন্দ্র মহন্ত, গৃহিনী ফুলমনি রানী (৩৭) স্বামী- মৃত সিবেন্দ্র চন্দ্র রায় ও প্রভাসের জামাই নিখিল চন্দ্র বর্মন (৩২) পিতা- হরিমোহন ওরফে বাচ্চা বর্মন,মাতা- শ্রীমতি রেনুবালা বর্মন সাং আংগায়রিয়া,পোষ্ট -ভূরুঙ্গামারী।
গত জুন মাসে প্রভাসের জামাই নিখিল চন্দ্র বর্মন ও তার এক বন্ধু (স্বপন) মিলে বড়ভিটার (শল্লীধরা ) শ্বশুরবাড়িতে এসে তার শ্বশুর ও বিধবাসহ ৫জনের নামে নাগেশ্বরী সোনালী ব্যাংকে এ্যাকাউন্ড খোলে এবং তাদেরকে জানায় যে এই এ্যাকাউন্ডে অনুদানের টাকা চলে আসবে।
যাহার শ্রীপুর থানার মামলা নং: ০২ তাং :০১/০৭ |২০২১
ধারা:৪০৬/৪২০/৪০৯/৪৬৮/৪৭১/৫১১/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়।
নিখিল চন্দ্র বর্মন তার বন্ধু (স্বপন) ও মামলার ২নং আসামী তানভীর( সাং: পিতা- অজ্ঞাত, মাস্টার রোলে কর্মরত হিসাব রক্ষণ অফিস,শ্রীপুর,গাজীপুর) এবং ৮ নং মামলার আসামী আরিফুল ইসলাম,অডিটর (পিতা-অজ্ঞাত, সাং: উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিস শ্রীপুর, গাজীপুর) এর প্রচরনায় পড়ে ঐ ২ নং ও ৮ ইং আসামীর যোগসাজশে এ্যাকাউন্ড করান।
পরবর্তীতে ৪ কৃষক ও ১জন গৃহিনীসহ ৫ জন ব্যক্তিকে ফুসলিয়ে অনুদানের টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে নিয়ে গিয়ে ২ নং ও ৮ নং আসামী তানভীর ও আরিফুল ইসলাম ৫ জন ব্যক্তির নামে ৫টি এ্যাডভাইজ বিল তৈরি করে ২ কোটি ৪৬ লক্ষ ৯ হাজার ৯ শত ৬০ টাকার হার্ডকপি হিসাব রক্ষণ অফিস, শ্রীপুর,গাজীপুর হইতে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, শ্রীপুর থানা হেড কোয়ার্টার শাখা, গাজীপুরে নিয়ে আসে এবং উক্ত বিলের টাকা পরিশোধের জন্য ব্যাংক শাখায় দাখিল করেন।
নিয়ম অনুযায়ী এ সময় ব্যাংক থেকে হিসাব রক্ষণ অফিসে ফোন করলে মামলার ১ নং আসামী হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা বজলুর রশিদ এসব এ্যাডভাইজের নিশ্চিয়তা প্রদান করেন।
পরে সোনালী ব্যাংক নাগেশ্বরী কুড়িগ্রাম শাখায় অভিযুক্ত ৫ জন ব্যক্তির ঐ টাকা এ্যাকাউন্ডে চলে আসে।
অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ব্যাংক এ্যাকাউন্ডে টাকা চলে আসার পর গাজীপুর,শ্রীপুর সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হলে নাগেশ্বরী সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে এ্যাকাউন্ড নাম্বারগুলো যাচাই-বাচাই করতে বলেন।
নাগেশ্বরী সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যাচাই করে জানান, এ্যাকাউন্ডধারীরা কেউই সরকারি চাকুরীজীবি নয়। এরা গ্রামের সাধারণ কৃষক ও গৃহিনী।
এর পেক্ষিতে শ্রীপুর উপজেলার জুনিয়র অডিটর খলিল উদ্দিন এ্যাকাউন্ডে ঝামেলা রয়েছে বলে জানান ।
পরে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নাগেশ্বরী শাখায় টাকা পেমেন্ট বন্ধ করে দেন।
এরপর মামলার ৯ নং আসামী সোনালী ব্যাংক লিমিটেড উত্তর খান শাখার গ্রাহক শাহেনা আক্তার এর এ্যাকাউন্ড নং :০১৩২১০১১০০৮৭৪৮ এ অসৎ উদ্দেশ্যে সাধনের জন্য চেকগুলি ব্যাংক শাখায় দাখিল করেন।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং ঘটনায় জড়িত থাকায় ফুলবাড়ী উপজেলা থেকে ৩জন কৃষক ও ১জন গৃহিনীকে গ্রেফতার করে গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় নিয়ে যায় ও ১জন পলাতক রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে এলাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, অভিযুক্ত ঐ ৫ জন সহজ সরল লোক। তারা এরম কাজ করতে পারে না। ওরা চকান্তের শিকার হয়েছেন। তাদেরকে ফুসলিয়ে এ চক্রে ফাঁসানো হয়েছে । তারা মামলা থেকে এদের মুক্তির দাবি জানান।
বড়ভিটা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান খয়বর আলী মিয়া বলেন, ঐ অভিযুক্ত ৫জন ব্যক্তি নিতান্তই হতদরিদ্র ও নিরক্ষর। এরা এ কাজে জড়িত বলে আমি মনে করি না।আসল প্রতারক চক্রটিকে ধরে আইনের আওতায় আনা হোক ও এদের মামলা থেকে মুক্তি দেওয়া হোক।
Leave a Reply