আবুল হোসেন বাবুল, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রাম জেলা সদরের হলোখানা ইউপি’র হেমেরকুঠি গাছবাড়ী এলাকায় একদল মাদকসেবীর চুরি, ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে গ্রামবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দুই চিহ্নিত মাদকসেবী কর্তৃক এক স্কুল ছাত্রের চুরি করে নিয়ে যাওয়া মোবাইল ঘটনার ১০দিন পর ২নং ওয়ার্ড মেম্বারের তৎপরতায় উদ্ধার হয়েছে। এদিকে এক মাদকসেবী চোরের মা ও বোন এলাকার মহৎ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানী ও নারী নির্যাতন মামলায় ফাসিয়ে হয়রানীর হুমকী দিচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে এবং এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা সদরের হলোখানা ইউনিয়নের হেমেরকুঠি গাছবাড়ী এলাকার অসহায় মোস্তফার স্কুল পড়–য়া পুত্র রাশেদুল ইন্টারনেটে ক্লাস করার জন্য গত ৭ জুন’২১ইং পারিবারিকভাবে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ১৩ হাজার ৯০০ টাকায় ১টি ভিভো মোবাইল ফোনসেট কিনে আনে। রাশেদুলের বাবা পঙ্গু এবং মা প্রতিবন্ধী হওয়ায় বাড়ীর সামনে বাঁধ রাস্তার ধারে সে মোবাইলের গান ডাউনলোডের জন্য একটি দোকান দিয়ে কোনমতে সংসার চালিয়ে আসছিল। রাশেদুলের হাতে নতুন মোবাইল দেখার পর থেকে ২নং ওয়ার্ডের বাদশা মিয়ার ছেলে চিহ্নিত মাদকসেবী রুবেল, আব্দুল জব্বার ছেলে নুরনবী এবং মজিদের ছেলে মফিজুল ফোন সেটটি চুরির চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। গত ২৪ জুন বিকালে রাশেদুল পানি খেতে বাড়ীর ভিতরে যাওয়ার সুযোগে পুর্ব থেকে দোকানের সামনে বসে থাকা রুবেল ও নুরনবী ফোন সেটটি অন্যত্র লুকিয়ে রাখে। বাড়ী থেকে ফিরে দোকানে এসে তার মোবাইল ফোনটি না পাওয়ায় খোজাখুজি শুরু করে। ঘটনাটি এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তি আব্দুল লতিফ মাষ্টার ও ২নং ওয়ার্ড মেম্বারকে জানানো হলে আব্দুল লতিফ মাষ্টারের সভাপতিত্বে এবং ওয়ার্ড মেম্বার ইউনুছ আলী সহ গন্যমাণ্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে একটি শালিস বৈঠক করে। এসময় রুবেল ও তার মা রোকেয়া, নুরনবীর পিতা জব্বার শালিসে দোষ স্বীকার করে শালিসের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়। সিদ্ধান্তে তারা হয় চুরি করে নিয়ে যাওয়া মোবাইল সেটটি ফেরত দিবে নতুবা নতুন একটি একই মোবাইল কিনে দিবে। গ্রামবাসী জানায় নির্ধারিত সময় পার হবার পর নুরনবীর পিতা জব্বার ৫ হাজার এবং রুবেলের মা রোকেয়া ৩ হাজার টাকা দেয়। এসময় আচমকা রুবেলের বোন বানেছা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তার ভাই চুরি করে নাই সে কেন টাকা দিবে মর্মে গ্রামবাসীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা মহৎ ব্যক্তিদের নামে শ্লীলতাহানী ও নারী নির্যাতনের মামলা করার হুমকী দিতে দিতে চলে যায়। গ্রামবাসী আরও জানায় গত ৩ জুলাই কুড়িগ্রাম সদর থানায় রুবেলের মা রোকেয়া ও বোন বানেছা গ্রামবাসীর নামে একটি মিথ্যা অভিযোগ করেছে। এব্যাপারে ২নং ওয়ার্ড মেম্বার ইউনুছ আলী জানান, আমি অনুসন্ধান চালিয়ে চার হাত বদল হওয়ার পরও চুরি যাওয়া মোবাইলটি বটতলী এলাকা থেকে উদ্ধার করেছি। আব্দুল লতিফ মাষ্টার বলেন- রুবেল, নুরনবী ও মফিজুল এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদকসেবী। মাদকের টাকা সংগ্রহ করতে এরা নিয়মিত চুরি, ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। তিনি আরও জানান এরা রাত্রে নেশা করে এলাকার বিভিন্ন বাড়ীতে ঢুকে ধারালো অস্ত্র ধরে টাকা দাবী করে। আমরা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত। সচেতন মহল অনতি বিলম্বে এলাকার এই চিহ্নিত মাদক সেবী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Leave a Reply