মুহাম্মদ আমানুল্লাহ আমান,ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট)প্রতিনিধিঃ
দীর্ঘ ছয় বছর পর গতকাল ১০ ই ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে জয়পুরহাট ষ্টেডিয়াম মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জয়পুরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য, এ্যাড.সামছুল আলম দুদু এমপি’র সভাপতিত্বে, সম্মেলনের উদ্বোধন করেন,বাংলাদেশ আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক এমপি,আব্দুর রহমান।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক, রেল ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি ভার্চুয়ালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বলেন,
জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু’র ভাষ্কর্যের নামে বিএনপি জামায়াত রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়, তারা দেশকে আরেকটি বধ্যভূমি বানাতে চায়। তাদের এই অশুভ উদ্দেশ্য সফল হবে না।তাদের অতিতের জ্বালাও-পোড়াও এর মত সকল অরাজনৈতিক কর্মকান্ড জনগন এবারও প্রতিহত করবে।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে যাদের নিয়ে জেলা কমিটি গঠন করা হবে তাদের নিয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, দলে কোন বিভাজন বরদাস্ত করা হবে না।
সম্মেলনের প্রধানবক্তা, দলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী,ড.হাছান মাহমুদ এমপি তার বক্তব্যে বলেন,
খালেদা জিয়া বলেছিলেন যে আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মাসেতু করতে পারবে না। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে একটি নয়, দুটি পদ্মা সেতু করবে। কিন্তু আজকে ১২টার পর পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যান বসে গেছে। পদ্মার দুই পার সেতু দিয়ে সংযুক্ত হয়ে গেছে।
খালেদা ও মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, তারা এখন কি বলবেন? এ সেতু দিয়ে আপনারাও গাড়ি চালিয়ে যাবেন। তবে যদি লজ্জা থাকে তাহলে অনুরোধ জানাবো সেতুর নিচ দিয়ে যাবেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা বলেছিল আ.লীগ সরকার পদ্মা সেতু করলেও জোড়াতালি দিয়ে করবে। সেতু কোন বিল্ডিং নয় যে একবার ঢালাই দিলে হয়ে যাবে। সেতু জোড়া দিয়েই বানাতে হয়। খালেদার সেই জ্ঞানটুকুও নেই।
ড. হাছান বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের নেতা নয়, তিনি পুরো বিশ্বের বাঙালির নেতা। পৃথিবীতে এমন নেতা অনেক বিরল, যার ডাকে লাখো মানুষ দেশকে স্বাধীন করার জন্য প্রাণ দিয়েছেন। ৭৫ সালে যারা বঙ্গবন্ধুকে ও আ.লীগকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে পারেনি তারাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। আজকেও যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তখন ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। তারাই ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা স্বাধীনতা অর্জনের পর দশকের পর দশক ধরে পাকিস্তানিরা আমাদের নিয়ে হাসিঠাট্টা করতো। এই রাষ্ট্র একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকতে পারবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করতো তারা। কিন্তু আজ প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে এমনভাবে এগিয়ে নিয়ে গেছেন যে পাকিস্তানের জনগণ বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে আক্ষেপ করেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ অর্থনৈতিক ভাবে এখন পাকিস্থানের চেয়েও অনেক এগিয়ে, পাকিস্থানের টিভিতে এখন বাংলাদেশের প্রশংসা করা হয়। শুধু পাকিস্থান নয় এবার অর্থনৈতিক সূচকে আমরা ভারতকে ছাড়িয়ে যাবো। এখন ঢাকার দিকে তাকালে মনে হয় আমরা ব্যাংককে আছি। আর এই এগিয়ে যাওয়াটাই সহ্য করতে পারছেনা পরাজিত শক্তিরা।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম সোলায়মান আলীর সঞ্চালনায় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন জয়পুরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল হাসান রিপু প্রমুখ।
সম্মেলনে শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন, জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক, মিজানুর রহমান টিটো।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে আগামী তিন বছরের জন্য নতুন কমিটির সভাপতি হিসাবে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, আরিফুর রহমান রকেট এবং সাধারণ সম্পাদক হিসাবে জেলা আ.লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক,জাকির হোসেনের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান।
Leave a Reply