কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের তালিকা প্রণয়নে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে চর-ভুরুঙ্গামারী ইউপি চেয়ারম্যান এটিএম ফজলুল হকের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় ওই ইউপি সদস্য গত ২২ জুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। শুধু তাই নয় নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ প্রকৃত পরিবারগুলো বঞ্চিত হয়েছেন ওই তালিকা থেকে।
জানা গেছে, উপজেলার চর-ভুরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড ইসলামপুর গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। নদীভাঙন কবলিত এলাকার অতিদরিদ্র/দুঃস্থ জনসাধারনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তা কার্যক্রম বাস্তবায়নে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা প্রণয়নের আওতায় ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা হালনাগাদ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা, ওয়ার্ড মেম্বার, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং ইউপি চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির স্বাক্ষরিত তালিকা হালনাগাদ পূর্বক জমা দেয়ার জন্য নির্দেশনা আসে। সে মোতাবেক চর-ভুরুঙ্গামারী ইউপি চেয়ারম্যান এটিএম ফজলুল হক ক্ষতিগ্রস্থ ৩৩টি পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করেন। তালিকায় দেখা যায় ৩৩টি নামের মধ্যে ১৫টি নাম ভুয়া (তালিকায় ক্রঃনং- ১, ২, ৩, ৪,৫, ৬, ৭, ১০, ১১, ১২, ১৪, ২৫, ২৬, ২৭, ৩৩)। তিনি নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ প্রকৃত পরিবারগুলোকে বাদ দিয়ে নিজের পছন্দমত ব্যক্তিদের নাম তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করেছেন। শুধু তাই নয় ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলামের স্বাক্ষর জাল করে তালিকাটি সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা দিয়েছেন বলে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই ওয়ার্ড মেম্বার।
এ ঘটনায় সরজমিন অনুসন্ধানে গেলে ওই এলাকার ভুক্তভোগী নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ পরেশ আলী, আপেল, জুরমান, শফিকুল, ইছব আলী বলেন চেয়ারম্যান সাহেব এলাকার দালালের মাধ্যমে আমাদের নিকট টাকা চেয়েছিল টাকা দিতে না পারায় আমাদের নাম তালিকাভুক্ত হয়নি।
কমিটির সদস্য চর-ভুরুঙ্গামারী ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা আফজাল হোসেন জানান, চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে তালিকায় স্বাক্ষর করতে বললে আমি অন্ধ বিশ্বাসে স্বাক্ষর করে দিয়েছি এর বেশি কিছু আমি জানি না।
ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের একটি ভুয়া তালিকা তৈরি করে আমার নিকট স্বাক্ষর চাইলে তালিকায় ৩৩টি নামের মধ্যে ১৫টি নাম ভুয়া থাকায় এবং প্রকৃত নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার তালিকা থেকে বাদ পড়ায় আমি স্বাক্ষর করতে অপারগতা প্রকাশ করি। পরে জানতে পারি আমার স্বাক্ষর জাল করে চেয়ারম্যান সাহেব তালিকাটি সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা দিয়েছেন।
চর-ভুরুঙ্গামারী ইউপি চেয়ারম্যান এ কে এম ফজলুল হক উক্ত মেম্বারের স্বাক্ষর জালের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন তালিকা প্রস্তুতের জন্য আমি কোন টাকা নেইনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফিরুজুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পত্রটি আমি পেয়েছি এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
খবরটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে পেজে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন
Leave a Reply