২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার পিরানহা মাছ নিষিদ্ধ করেছে। সরকারের তরফ থেকে এর স্পষ্ট কারণও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এই মাছ আমাদের দেশের জীববৈচিত্রের জন্য হুমকি। এই মাছগুলোর দাঁতের গঠনশৈলীর কারণে অন্যান্য মাছকে সহজে শিকারে পরিণত করতে পারে। তাই চাষের পুকুর থেকে খাল-বিল ও নদীতে চলে গেলে আমাদের দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রজনন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই যুক্তিতেই পিরানহা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
কিন্তু অতিউৎসাহী কিছু লোক না জেনে একটা অবৈজ্ঞানিক তথ্য প্রচার করে যাচ্ছে। তারা বলছেন, মাছটি খুবই বিষাক্ত; স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ! এতে করে দেখলাম, এই তথ্যের ওপর নির্ভর করে মাছগুলো বিক্রেতা থেকে জব্দ করে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। এটা খুবই হৃদয়বিদারক। এগুলো গরীবদেরকে দিয়ে দেওয়া যায়। সরকারী কর্মকতার এমন অবৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্তে মর্মাহত হয়েছি।
কেননা, এই মাছগুলোর রাক্ষুসে বলে কুখ্যাতি থাকলেও মানুষখেকো অথবা মানুষের জন্য ক্ষতিকর হওয়ার স্বপক্ষে কোন মজবুত প্রমাণ নেই। দক্ষিণ আমেরিকার পিরানহা অধ্যুষিত নদীর পানিতে মানুষজন কোন দুর্ঘটনার শিকার হওয়া ছাড়াই সাঁতার কাটতে পারে। এপর্যন্ত কোন মৃত্যুর রেকর্ড নেই।
মৎসবিজ্ঞানীরা বলেছেন, সাপ জাতীয় প্রাণীর মতো এই মাছে কোন ধরনের বিষক্রিয়া নেই। খাদ্য হিসেবে গ্রহণেও কোন বিষ সৃষ্টি হয় না। এই পিরানহা মাছগুলোই আমাজন নদীর পাশে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ মানুষের খাবারের উৎস। তারা এগুলোর উপর নির্ভর করে জীবন ধারণ করে। এগুলো সুস্বাদু ও পুষ্টিকরও বটে। তবে দেশীয় জীববৈচিত্র রক্ষায় আমাদের দেশে এই মাছ চাষ না করা উচিৎ।
কিছু দিন পূর্বে তেলাপিয়া মাছ নিয়েও ইউটিউবে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হয়েছে। পরে গবেষণায় আমাদের দেশীয় তেলাপিয়া মাছে কোন ক্ষতিকর কিছু পাওয়া যায় নি।
Leave a Reply