রায়হান কবির রবিন, বগুড়া সংবাদদাতাঃ
বগুড়ার বিসিআইসি এর বাফার গুদামে কর্মবিরতি পালন করেছেন কর্মরত শ্রমিকরা। গত ১১ই মার্চ ২১ইং তারিখে বাফার শ্রমিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রহমান নামে একজন শ্রমিক নেতাকে ছাঁটাই করার প্রতিবাদে গতকাল ১৯মার্চ সোমবার সকাল থেকে এই কর্মবিরতি পালন করছেন জেলা বিসিআইসি সার গুদাম কুলি শ্রমিক
ইউনিয়নের সদস্যরা।
তবে একই দিন বিকেলে বাফার গুদামের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, বিকেলে শ্রমিকরা কাজে ফিরেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১১ মার্চ নগরবাড়ি ঘাট থেকে ২১ মেট্রিকটন ইউরিয়া সারবাহী একটি ট্রাক বগুড়া বাফার গুদামে আসে যার নাম্বার “বগুড়া-ট ১১-০৬৭৫ ঐ ট্রাক থেকে শুধুমাত্র দেড় টন সার গুদামে আনলোড হবে এবং হাফ টন লোড হবে। এরপর ঐ অফিসের আনসারের পিসি মোঃ হাবিবকে ট্রাক লোড, আনলোড করার দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে ট্রাক ড্রাইভার টয়লেট করতে চলে যায়। অফিসের লোকজন যথারীতি ট্রাক থেকে সার আনলোডের সমস্ত প্রক্রিয়া লেবারদের মাধ্যমে শেষ করে ট্রাককে বিদায় করে দেয়।
পরবর্তীতে আধঘন্টা খানেক পর কর্মকর্তাদের নজরে আসে ওই ট্রাক থেকে কোন সার আনলোড না করেই তাকে চালান দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তৎক্ষণাত ওই ট্রাকটিকে আবারো ডেকে এক টন সার আনলোড করানো হয়। এদিকে, এ সমস্ত ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় আব্দুর রহমান নামে একজন কুলিকে।
অফিস থেকে বলা হয়, আব্দুর রহমান অসৎ উদ্দেশ্যে ওই ট্রাক থেকে সার আনলোড না করে আত্মসাৎ করার চেষ্টা করেছিল। ফলে ওই গুদামের সমস্ত কাজ থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়ে নোটিশ ঝুলানো হয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে অন্যান্য কুলি শ্রমিকদের ভেতরে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করে এবং তারা একত্রে হয়ে বিষয়টির সুরাহার জন্য বাফার গুদামের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোস্তাফা কামালের নিকট ধরনা দিতে থাকেন। কিন্তু বিষয়টি মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো সমাধান হয়নি। এরই জের ধরে সোমবার সকাল থেকে সকল কুলি শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে অনির্দিষ্ট কালের জন্য আন্দোলন শুরু করে।
বগুড়া বাফার গুদামের ব্যবস্থাপক মোস্তফা কামাল জানান, গত ১১ মার্চের ঘটনায় প্রতারণার অভিযোগসহ আরো অনেক অনিয়মের বিষয়ে আব্দুর রহমানকে কাজ থেকে অব্যাহতির জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিলয় এন্টার প্রাইজকে লিখিতভাবে জানানো হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে ওই প্রতিষ্ঠান আব্দুর রহমানকে সমস্ত কাজ থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছেন। তবে সকালে কর্মবিরতির পর বিকালে আবারো কর্মে ফিরেছেন শ্রমিকরা। ট্রাকের ড্রাইভার সিরাজের কাছে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, ১১মার্চ ট্রাকটি আনলোড করার সময় সেখানে অভিযুক্ত আব্দুর রহমান সেখানে উপস্থিত ছিলেন না, উপস্থিত ছিলেন বাফার আনসারের পিসি হাবিব এবং লেবার সর্দার বাবু সহ কয়েকজন কুলি, তারাই লোড আনলোড করেছেন। তিনি আরো বলেন, এই সম্মন্ধে জানার কথা পিসি ও বাফার ব্যবস্থাপক মোস্তফা কামালের, কারন তার সাক্ষর ছাড়া আমরা লোড আনলোডের চালান পাই না, পরে কর্মকর্তারা জোর করে আব্দুর রহমানের উপর দোষ চাপিয়ে আমার কাছ থেকে একটি লিখিত আকারে জবানবন্দি নেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবস্থাপক মোস্তফা কামাল গনমাধ্যমকে বলেন, আব্দুর রহমান’ই এই বিষয়ের সাথে এবং পূর্বেও তার বিরুদ্ধে নানান অপকর্মের অভিযোগ আছে। অভিযুক্ত আব্দুর রহমান বলেন, আমার ছোট খাটো ভুল থাকলেও আমি চুরির সাথে কখনোই সম্পৃক্ত ছিলাম না, তিনি আরো বলেন, এই চুরি এবং অনিয়মের সাথে বাফারের উর্ধতন কর্মকর্তা ও পিসি জরিত আছে। নিউজ লেখা পর্যন্ত এ বিষয়টির তেমন কোন সুরাহা হয়নি।
Leave a Reply