শরিফা বেগম শিউলী, রংপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর অনিয়ম, দুর্নীতির ১শ’ ১০টি অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করতে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।
রোববার বেলা ১২টায় ইউজিসির তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটির প্রধান প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দের নেতৃত্বে ইউজিসির সিনিয়র সহকারী সচিব জামাল উদ্দিন ও ইউজিসির সদস্য সিনিয়র সহকারী সচিব শেখ আমিনুল ইসলাম ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছান। পরে প্রশাসনিক ভবনের হলরুমে গনমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ্যে তদন্ত কমিটির প্রধান প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, সব ধরনের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। তদন্তে থাকবে নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা। এনিয়ে মনে কোন সংশয় না রাখার আহবান জানান তিনি।
তদন্তের আগে ইউজিসির সিনিয়র সহকারী সচিব ও সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব জামাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক পত্র গত ২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত শিক্ষক বরাবর পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে একই পত্রের অনুলিপি দেয়া হয় উপাচার্যের একান্ত সচিবকেও। এতে বলা হয় ১৪ মার্চ তদন্তকাজ অনুষ্ঠিত হবে। এতে উল্ল্যেখ করা হয় যে, উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের দালিলিক প্রমাণাদিসহ সাক্ষীদের উপস্থিত থাকার জন্য তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়।
শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কমলেশ চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান স্বাক্ষরিত, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা এ্যাসোসিয়েশন, কর্মচারী পরিষদ, শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন সময়ে গনমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের তথ্যউপাত্ত ২০১৯ সাল হতে পরবর্তী সময়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে পাঠানো উপাচার্যের বিরুদ্ধে ১শ’১০টি অভিযোগ তোলা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা অমান্য করে ক্যাম্পাসে ধারাবাহিক অনুপস্থিতি, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি, ইউজিসির নির্দেশনা অমান্য করে জনবল নিয়োগ, শিক্ষক ও জনবল নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়ম, নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি হয়েও অনুপস্থিতি, নিরাপত্তাহীন ক্যাম্পাস, ইচ্ছেমত পদোন্নতি, আইন লঙ্ঘন করে একাডেমিক প্রশাসনিক পদ দখল ও ক্রয় প্রক্রিয়ায় নীতিমালা লঙ্ঘন।অভিযোগকারী বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক মশিউর রহমান জানিয়েছেন, অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ শিক্ষামন্ত্রী বরাবর পাঠানো হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে রোববার তদন্তে এসেছেন ইউজিসি’র তদন্ত কমিটি। তারা প্রস্তুত অভিযোগের দালিলিক প্রমানপত্রসহ উপস্থিত হতে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহবায়ক ড. মতিউর রহমান জানিয়েছেন, উপাচর্যের লাগামহীন দূর্নীতির স্পষ্টতা তুলে ধরে শনিবার ৭শ’ ৯০ পৃষ্টার শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। নিশ্চয়ই ইউজিসি’র তদন্ত কমিটি বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে দেখবেন এবং দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন।
Leave a Reply