ভালো থাকতে সবাই চায়। মানসিক আর শারীরিক এই ভালো থাকাকে একসঙ্গে অর্জন করা বেশ কঠিন কিছু মনে হচ্ছে? গবেষক এবং চিকিৎসকদের মতে, এই দুটো বিষয় একে অন্যের সঙ্গে জড়িত। আপনি মানসিকভাবে ভালো থাকলে এর প্রভাব আপনার শরীরের ওপরেও পড়বে। ফলে, খুব বেশি চেষ্টা করা ছাড়াই সুস্থ থাকবেন আপনি।
প্রোসেডিং অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সে প্রকাশিত এক পরীক্ষায় জানা যায় যে, মানসিকভাবে সুস্থ থাকলে স্ট্রেস হরমোন এবং করটিজলের মাত্রা কমিয়ে আনা যায়। এতে করে টাইপ টু ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন ইত্যাদি সমস্যা থেকেও দূরে থাকা সম্ভব হয়। কিন্তু প্রতিদিন নিজেকে মানসিকভাবে খুশি ও ভালো আপনি রাখবেন কীভাবে?
১। সকালটা শুরু করুন ভালো কোনো চিন্তা দিয়ে
‘ইশ! আজকেও অফিসে যেতে হবে’- এমন চিন্তা দিয়ে যদি আপনার দিনের শুরু হয় সে ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়তে পারে বাকিটা দিনের ওপরেও। তাই নেতিবাচক চিন্তাকে সরিয়ে দিয়ে ইতিবাচক চিন্তা ভাবুন। সকালে নিজেকে আয়নায় দেখুন, একটু হাসুন। ভালো কোনো কিছু করার চিন্তা দিয়ে দিনের শুরু হলে বাকি দিনটাও ভালো অনুভূতি দিয়ে কেটে যাবে- এমনটা আশা করাই যায়।
যদি মেডিটেশন করতে ইচ্ছা না হয়, তাহলে কাজের উদ্দেশ্যে বের হওয়ার আগে কয়েকটি মন ভালো করে দেওয়া গান শুনে দেখতে পারেন। গানও আপনার মন ভালো করে দিতে পারে।
২। নেতিবাচক চিন্তাকে সরিয়ে দিন
নিশ্চয় ভাবছেন যে, নেতিবাচক কোনো চিন্তাকে সরিয়ে দেওয়া এতোটা সহজ নয়। কথাটা সত্যি। তবে, আপনি কিছু উপকরণের সাহায্যে সহজেই এই কাজটি করতে পারবেন। এই যেমন- আপনি হাতে একটি ব্যান্ড পরতে পারেন। যখনই আপনার মাথায় কোনো নেতিবাচক চিন্তা আসবে, সঙ্গে সঙ্গে হাতের রিস্টব্যান্ডটি একবার ঘুরিয়ে নিন। আর মাথা থেকে চিন্তাকে সরিয়ে ফেলুন। যদিও বিষয়টি একটু অভ্যাসের ব্যাপার। তবে কয়েকবার কাজটি বারবার করতে থাকলে সহজেই এ ব্যাপারে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন আপনি।
৩। ছোটবেলায় ফিরে যান
অনেক অনেক কাজ আর মানসিক চাপের ভিড়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলছেন? মিনিট দশেক ছুটি নিন। ফোন, ইন্টারনেট সব থেকে দূরে গিয়ে নিজের মতো করে ভাবুন। ইচ্ছেমতো রঙ দিয়ে কাগজে আঁকুন। কিছুক্ষণ ইচ্ছে হলে গলা ছেড়ে গানও গাইতে পারেন। ফিরে যান ছোট্টবেলায়। সময়টা খুব অল্প। কিন্তু এই সময়েই দেখবেন আপনার মানসিক চাপকে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন আপনি।
৪। একটু ঘুমিয়ে পড়ুন
ক্লান্ত হলে খানিকটা ঘুমিয়ে নেওয়া আমাদের সবার জন্যই দরকারি। তবে, এটি আমাদের মানসিকভাবে সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে। অনেকটা সময় না ঘুমালে এর নেতিবাচক কিছু প্রভাব আপনার ওপরে এসে পড়তেই পারে। তাই, আর যাই হোক, ঘুমকে মোটেই হেলাফেলা করবেন না।
রাতে সঠিকভাবে ঘুমানোর জন্য এক মিনিট সময় আলাদা করুন। এই সময়ে বড় বড় করে নিঃশ্বাস নিন এবং মুখ দিয়ে ছাড়ুন। এতে করে আপনার রাতের ঘুমটা হবে নিরবচ্ছিন্ন।
উপরের সবগুলো কৌশলই একসঙ্গে ব্যবহার করে দেখুন। এমন নয় যে, এদের প্রত্যেকটিই আপনাকে মানসিকভাবে অনেক বেশি সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে। তবে হ্যাঁ, আপনি যদি সঠিক পরিমাণে ঘুমান, নিজেকে সময় দেন, মানসিক চাপ থেকে কিছুটা দূরে থাকার ব্যাপারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন- তাহলে কয়েক সপ্তাহ পর মানসিকভাবে ভালো থাকা আপনার পক্ষে অনেক বেশি সহজ হয়ে পড়বে।
Leave a Reply