রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ রৌমারীতে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক সাখাওয়াত হোসেন সাগর নামের এক সেনা সদস্যের বাড়িতে তিন দিন ধরে অনশন করছে প্রেমিকা বিউটি আক্তার নামের এক কলেজ ছাত্রী। দীর্ঘদিনের প্রেম ভালোবাসার সর্ম্পকের এক পর্যায়ে ওই সেনা সদস্য ছুটিতে এসেই বিয়ে করার কথা বলে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় প্রেমিকাকে। গত সোমবার সকালের দিকে প্রেমিকাকে নিয়ে বাড়িতে গেলে সেনা সদস্যের অভিভাবক তাদের সর্ম্পক মেনে না নিয়ে প্রেমিকাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বিয়ের দাবিতে প্রেমিকা আজ বুধবার পর্যন্ত ওই বাড়িতেই অবস্থান করছিল। উপজেলার চেংটাপাড়া গ্রামের ঘটনা এটি। সরেজমিনে ওই বাড়িতে গিয়ে কথা হয় প্রেমিকা বিউটি আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ওর (প্রেমিকা সেনা সদস্য) সঙ্গে দীর্ঘ ৫ বছরের প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক আমার। সে বিয়ে করার নিশ্চয়তা দিয়ে আমার সঙ্গে সব কিছুই করেছে। ছুটিতে এসে ও আমাকে বিয়ে করার কথা তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। কিন্তু ওর বাবা মা আমাদের সর্ম্পক মেনে নেয় না। চক্রান্ত করে ওকে (প্রেমিক) বাড়ি থেকে অন্য স্থানে পাঠিয়ে দিয়ে আমার ওপর অত্যাচার নির্যাতন শুরু করে। আমাকে জোর করে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে। বিয়ে না করে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিলে আমার মরণ ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। কেননা এরই মধ্যে বিষয়টি সারা এলাকায় ছড়িয়ে গেছে।’ উপজেলার চেংটাপাড়া গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের পুত্র সাখাওয়াত হোসেন সাগর। তিন বছর আগে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। আর প্রেমিকা বিউটি আক্তার একই উপজেলার মন্ডলপাড়া গ্রামের কৃষক পরিবার আব্দুস সামাদ এর মেয়ে। তিনি রৌমারী সরকারী কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে লেখাপড়া করেন। ৫ বছর আগে থেকে তাদের দু’জনের মধ্যে প্রেম ভালোবাসার সর্ম্পক বলে মেয়ের পরিবার সূত্রে জানা গেছে। এ ব্যাপারে প্রেমিক সেনা সদস্য সাখাওয়াত হোসেন সাগরের মোবাইল ফোনে একাধিক বার ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তার বাবা মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘কলেজ লাইফে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে একটু আধটু প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক থাকে। তাই বলে বিয়ে করতে হবে? কোনো ভাবেই ওই মেয়েকে আমার ছেলের বউ করব না। মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে দিব।’ অপরদিকে প্রেমিকার বোন শিরিনা আক্তার অভিযোগ করেন, ‘আমার বোনকে বিয়ে কর্রা জন্যই ডেকে নিয়ে গেছে। এখন নানা টালবাহানা করছে। তার ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে। খাবার দেয়া হচ্ছে না। আমরা থানা পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু পুলিশ রহস্যজনক কারণে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান ইনাম বলেন, এমন খবর পাওয়ার পর আমরা ওই বাড়িতে গিয়ে ছিলাম। কিন্তু মেয়েটি বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত বাড়ি থেকে যাবে না বলেছে। এ অবস্থায় আমরা বলেছি পারিবারিক ভাবে বিষয়টি মিমাংশা করার জন্য। কোনো পক্ষই লিখিত ভাবে অভিযোগ দেয়নি।’
Leave a Reply