মোঃ আরিফুল ইসলাম জয়, স্টাফ রিপোর্টারঃ
করোনা সংক্রামণ প্রতিরোধে সব ধরনের জমায়েত, সভা-সমাবেশ আয়োজন অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধের মধ্যেই তিন দিন ব্যাপী ইজতেমার প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি কুড়িগ্রাম জেলা শাখা। তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে করোনা পরিস্থিতিতে সব ধরনের গণজমায়েত অনুষ্ঠান আয়োজন বন্ধের নির্দেশ থাকায় আয়োজকদের ইজতেমা অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয়নি জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আগামী ১১,১২,১৩ ও ১৪ মার্চ সকাল পর্যন্ত কুড়িগ্রাম সদরের ধরলা ব্রিজের পূর্বপাড়ে ফজলুল করীম (রহ:) জামিয়া ইসলামীয়া ময়দানে তিনদিন ব্যাপী এ ইজতেমার প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি।
এদিকে ইজতেমা আয়োজনে আয়োজকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৯ মার্চ) জেলা প্রশাসনের জুডিসিয়াল মুন্সিখানা শাখা থেকে এক পত্রের মাধ্যমে ইজতেমা আয়োজনের অনুমতি না দেওয়ার বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইজতেমা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায় প্রস্তুতি প্রায় শেষের পর্যায়ে রয়েছে। শেষ মহূর্তের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে ব্যস্ত সেচ্ছাসেবীরা। ইতোমধ্যে কিছু মুসল্লি তাঁবু টেনে রাত্রীযাপন শুরু করেছেন। প্রশাসনের অনুমতি না মেলার খবরে আয়োজকরা দফায় দফায় বৈঠক করছেন।
বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হাবিবুল্লাহ বলেন, অনুমতির জন্য একমাস আগে আবেদন দেওয়া হয়েছিল। প্রশাসন ‘মৌখিকভাবে অনুমতি’ দিয়েছে ‘আশ্বস্ত’ করেছে। আমরা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এখন যদি কোনও ব্যত্যয় ঘটে তাহলে সবার কাছে আমরা প্রশ্নবিদ্ধ হবো।
ইজতেমা ইনতেজামিয়া কমিটির আহ্বায়ক মোখছেদুর রহমান বলেন, ‘প্রায় একমাস আগে জেলা প্রশসনকে অবগতিপত্র দিয়ে ইজতেমার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। মঙ্গলবার আমরা অনুমতি না মেলার বিষয়টি জানতে পেরেছি। তবে আমরা বুধবার (১০ মার্চ) জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে আবারও সাক্ষাৎ করবো। আশা করছি শেষ পর্যন্ত অনুমতি মিলবে।’
তবে জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম বলেন, ‘তারা একমাস আগে আবেদন করলেও আমরা কোনোভাবেই সম্মতি দেইনি। আমি তাদের বারবার বলেছি এটা অনুমতি দেওয়ার কোনও সুযোগ নাই। চলমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক সব ধরনের গণজমায়েত অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ফলে আয়োজকদের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘মৌখিক সম্মতি’ দেওয়া হয়েছে, আয়োজকদের এমন দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আমরা বলেছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা বিবেচনা করবো। কিন্তু পরিস্থিতি তো স্বাভাবিক হয়নি। ইতোমধ্যে সংক্রমণ কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে। আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।’
ইজতেমা আয়োজনে জেলা প্রশাসনের অনমুতি না দেওয়ার বিষয়টি অবগত রয়েছেন জানিয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খান শাহরিয়ার জানান, চিঠির অনুলিপি পাওয়ার পর আমরা আয়োজকদের সঙ্গে দেখা করে অনুমতি ছাড়া ইজতেমা অনুষ্ঠান না করার নির্দেশনা দিয়েছি। এ নিয়ে মুসল্লিদের মাঝে যেন কোনও ধর্মীয় অসন্তোষ দেখা না দেয় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে আমরা তাদের বলেছি। আশা করছি তারা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আয়োজন স্থগিত করবেন।
Leave a Reply