চৌধুরী নুপুর নাহার তাজ, দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
হাবিপ্রবির ২ ছাত্র হত্যা মামলায় কারাগারে আ.লীগ নেতা কাঞ্চন।
দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) দুই ছাত্র হত্যা মামলার তিন নম্বর আসামি আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ কাঞ্চনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) দুপুরে চার্জশিট দাখিলের একবছর পর দিনাজপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন কাঞ্চন। এসময় জামিনের আবেদন করলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান সরকার তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে ২০২০ সালের ২৯ জুলাই দিনাজপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১ (সদর) এ চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক (ওসি) রমজান আলী।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৬ এপ্রিল দিনাজপুর হাবিপ্রবির ভেটেরিনারি অনুষদের নবীনবরণ অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানে রাত ৮টার দিকে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ সশস্ত্র হামলা চালায়। এসময় তারা ককটেল বিস্ফোরণ ও ফাঁকা গুলি করেন এবং শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মারধোর করেন। এর জবাবে অপর একটি গ্রুপ প্রতিরোধ গড়ে তুললে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। এতে বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জাকারিয়া শহীদ নুর হোসেন ও কৃষি বিভাগের ছাত্র মাহমুদুল হাসান মিল্টন নিহত হন।
এ ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি মামলায় ৪১ জনকে আসামি করা হয়। একই ঘটনায় ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল নুর বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৫০-৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
২০২০ সালের মার্চে মামলা তিনটি সিআইডিতে স্থানান্তরিত করা হয়। তদন্ত শেষে ২৬ জনকে (এরমধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা বিশ্বজিৎ ঘোষ কাঞ্চনের নাম রয়েছে) অভিযুক্ত করে একই বছরের ২৯ জুলাই চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির ওসি রমজান আলী। এরপর থেকে পলাতক ছিলেন কোতোয়ালি আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষ কাঞ্চন।
এ মামলায় জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সভাপতি ও বাহাদুর বাজার এলাকার নুরুল ইসলাম মানুর ছেলে আবু ইবনে রজবসহ কয়েকজন জামিনে রয়েছেন।
দিনাজপুরের কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান জানান, অব্যাহতিপ্রাপ্ত কোতোয়ালি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসামি বিশ্বজিৎ ঘোষ কাঞ্চনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জামিন আবেদনের শুনানীতে রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী ছিলেন, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি, দিনাজপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ সাইফুল ইসলাম এ্যাডভোকেট এবং স্পেশাল পিপি রবিউল ইসলাম। রাস্ট্রপক্ষের উকিল হাজী মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নিজেই ওই দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন এবং তার সুবিচার পাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা এর বাস্তবায়ন পেয়েছি। বুয়েটের আবরার হত্যাকান্ড এবং বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ডের চেয়ে হাজী দানেশের ছাত্রলীগের দুই নেতা জাকারিয়া ও মিল্টন হত্যাকান্ড কোনো অংশে কম নয়। এদিকে আসামী কাঞ্চনের লোকজনেরা বলাবলি করছে, জেলখানা তাকে বেশিদিন তাকে আটকে রাখতে পারবেনা”।
আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন, হযরত আলী বেলাল, সারোয়ার আহমেদ বাবু, দেলোয়ার হোসেন, খাদেমুল ইসলামসহ অন্যান্য।
Leave a Reply