স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগী, ক্যানসার থেকে সুস্থ হয়ে আসা রোগী ও তাদের কেস হিস্ট্রি থেকে পরীক্ষামূলক গবেষণা করে বেশ কিছু পয়েন্ট তুলে এনেছে পরীক্ষকেরা। তারা আশা করছেন, এ সকল তথ্য স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে ভালো ভূমিকা রাখবে।
কারণ স্তন ক্যানসার যেকোন সময় দেখা দিতে পারে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই রয়েছে বিপদ সীমানার মাঝে। তবে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে যে কাজগুলো আবশ্যক, তা জেনে নিন আজকের ফিচার থেকে।
এ বিষয়ে অবহেলা করা একেবারেই উচিত হবে না। পরিবারের স্বাস্থ্য ও রোগের ইতিহাস সম্পর্কে জানা থাকলে আগে থেকেই সতর্ক হওয়া যায়। বিশেষত পরিবারের কারোর স্তন ক্যানসারের রেকর্ড আছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। অ্যামেরিকান ক্যানসার সোসাইটি জানাচ্ছে, ৫-১০ শতাংশ স্তন ক্যানসার হয়ে থাকে জিনগত ও পারিবারিক সূত্রে। যদি মা, বোন অথবা মেয়ের স্তন ক্যানসার দেখা দেয় তবে তার কাছের আত্মীয়দের মাঝে স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনা বেড়ে যায় দ্বিগুণ। পরিবারের স্বাস্থ্যের ইতিহাস সম্পর্কে জানা থাকলে আগে থেকেই সচেতন থাকা সম্ভব হয়।
ঘরে নিয়মিত নিজের স্তন নিজে পরীক্ষা অবশ্যই জরুরি। তবে এর সাহায্যে স্তন ক্যানসার শতভাগ নির্ণয় করা সম্ভব নয়। এছাড়া লুকায়িত বেশ কিছু অস্বাভাবিকতা অনেক সময় এতে ধরা পরে না। সেক্ষেত্রে ম্যামোগ্রাম (Mammogram) এর প্রয়োজন হয়। ম্যামোগ্রাম হলো লো-এনার্জি এক্সরের একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে সহজেই স্তন ক্যানসার বা স্তনের অস্বাভাবিকতা নির্ণয় করা সম্ভব হয়। নিয়মিত ম্যামোগ্রাম করানো হলে খুব সহজেই স্তন ক্যানসারের ভয়াবহতাকে দূরে রাখা সম্ভব হবে।
দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় উভয় প্রকার আঁশ জাতীয় খাবার যথাসম্ভব পর্যাপ্ত পরিমাণ খেতে হবে। কারণ আঁশযুক্ত খাদ্য উপাদান স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর। বেশ কিছু গবেষণার তথ্য থেকে জানা যায়, প্রতিদিন অন্তত ৩০ গ্রাম পরিমাণ আঁশ গ্রহণে ৩২ শতাংশ পর্যন্ত স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনা কমে যায়। আঁশযুক্ত খাদ্য গ্রহণের উপর জোর দিতে গাজর, ওটস, বাদাম, আপেল ও শাক জাতীয় খাবার বেশি খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিতে শুধু নারীরা নন, পুরুষরাও থাকেন। সেক্ষেত্রে ধূমপান অনেক বড় একটি আতঙ্কের নাম। ধূমপান পরিহারে ফুসফুসের ক্যানসার, হৃদরোগসহ বহু অসুস্থতার সম্ভাবনাকে কমিয়ে আনা যায় লক্ষণীয় মাত্রায়। যার মাঝে স্তন ক্যানসারের সম্ভাবনাও রয়েছে। আরও বড় বিষয় হচ্ছে, পুরুষদের চাইতে নারীদের মাঝে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি দেখা যায় ধূমপানের ফলে।
ওজন বৃদ্ধি ও ওবেস হওয়া যাওয়া, বিশেষত মেনোপজের পর, স্তন ক্যানসারের সম্ভবনাকে আশঙ্কাজনক হারে বাড়িয়ে দেয়। যে কারোর জন্যেই স্তন ক্যানসার থেকে দূরে থাকা প্রধান পরামর্শ হচ্ছে, ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। শরীরে যত বেশি ফ্যাট জমা হবে, তত বেশি এস্ট্রোজেন তৈরি হবে। এই অতিরিক্ত এস্ট্রোজেন একইসাথে নারীদের স্তন ও জরায়ু ক্যানসারের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা দৈনিক আধা ঘন্টা হাঁটা ও ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজের পরামর্শ দেন।
Leave a Reply