কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার অষ্টমীরচর ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের কবলে পড়ে সম্পূর্নরূপে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত জুলাই মাসের দীর্ঘমেয়াদী বন্যায় ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে ওই জনপদের ৫টি গ্রাম নিশ্চিহ্ন হওয়াসহ উপজেলার ৫ইউনিয়নের প্রায় ১হাজার ৬শ পরিবারের বসত-ভিটা, মসজিদ,মাদ্রাসা,প্রাথমিক বিদ্যালয় মিলে ১১টি প্রতিষ্ঠান ও হাজার হাজার একর আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১টি হাই স্কুলসহ অন্তত ৫শতাধিক বাড়ি-ঘর ও কয়েক হাজার একর ফসলি জমি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক বন্যায় ব্রহ্মপুত্র নদের অপ্রতিরোধ্য ভাঙনের ফলে উপজেলার অষ্টমীরচর ইউনিয়নের খামার বাশপাতার, ভাষারপাড়া, মাজবাড়ী, খারুভাজ ও খামার বাশপাতার পূর্বপাড়া গ্রাম ৫টির প্রায় ৫শতাধিক পরিবারের বসতভিটা সম্পুর্নরূপে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ২৫টি পরিবার, রমনা ইউনিয়নের ৪টি পরিবার,নয়ারহাট ইউনিয়নের ৩৫০টি পরিবার, চিলমারী ইউনিয়নের ১৯০টি পরিবার ও অষ্টমীরচর ইউনিয়নের ৫শতাধিক পরিবারসহ মোট ১হাজার ৫শ ৯৯টি পরিবারের ঘর-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
অষ্টমীরচর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য গোলাম মোস্তফা জানান,আজ থেকে ১৫দিন আগে জনপদ হিসাবে যে ৫টি গ্রামে কয়েক হাজার মানুষ বাস করতো আজ সে এলাকাগুলো পানি আর পানি। নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া ওই গ্রাম সমুহের মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে ২টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ বিভিন্ন ফাকা জায়গায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, ,গত বন্যার পানিতে অষ্টমীরচর ইউনিয়নের সম্পূর্ন ৫টি গ্রাম, দিঘলকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, খোদ্দবাশপাতার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফ্রেন্ডসিপ স্বুল, ৯টি মসজিদ ও ১টি হাফিজিয়া মাদ্রাসাসহ অসংখ্য স্থাপনা এবং হাজার হাজার একর আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে ভাটপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,চরমুদাফৎ কালিকাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নটারকান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নটারকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়সহ ৫শতাধিক বাড়ি ও হাজার হাজার একর ফসলি জমি।
সদ্য ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বাড়িঘর হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো দিশেহারা হয়ে পড়েছে। গরু-ছাগল,হাঁস-মুরগি নিয়ে বসবাসের জন্য একটু ঠাঁই খুঁজতে ছুটে বেড়াচ্ছেন তারা। ওইসব এলাকার মানুষের আহাজারিতে বাতাস যেন ভারি হয়ে উঠেছে।
অষ্টমীরচর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবু তালেব ফকির জানান, গত বন্যার সময়ে তার ইউনিয়নে ১৩টি প্রতিষ্ঠান ও ৫টি গ্রামের মোট ১হাজার ৩০টি পরিবারের বাড়ী-ঘর নদী গর্ভে চলে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এডব্লিউ এম রায়হান শাহ বলেন, অষ্টমীরচর ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম,১৩টি প্রতিষ্ঠানসহ উপজেলার ৫ইউনিয়নে ১হাজার ৫শ ৯৯ পরিবারের বসতভিটা নদীতে ভেঙে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থদের সহায্যার্থে তালিকা প্রেরন করা হয়েছে।
Leave a Reply