1. nahidbd6969@gmail.com : kurigrampratidin :
  2. 123@kurigrampratidin.com : itsme :
ফুলবাড়িতে সর্ববৃহৎ কৃত্রিমভাবে স্পিরুলিনার চাষে স্বপ্ন দেখছেন উদ্যোক্তারা - কুড়িগ্রাম প্রতিদিন
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:০৮ অপরাহ্ন

ফুলবাড়িতে সর্ববৃহৎ কৃত্রিমভাবে স্পিরুলিনার চাষে স্বপ্ন দেখছেন উদ্যোক্তারা

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল, ২০২১
  • ৫৫ Time View

আরিফুল ইসলাম জয়, স্টাফ রিপোর্টারঃ

কুড়িগ্রাম জেলা ফুলবাড়িতে সর্ববৃহৎ কৃত্রিমভাবে স্পিরুলিনার চাষে স্বপ্ন দেখছেন উদ্যোক্তারা।
স্পিরুলিনা নামটি অনেকের কাছে অপরিচিত মনে হলেও মানুষের দেহের জন্য খুবেই উপকারী। বাংলাদেশে স্পিরুলিনার বাণিজ্যিক চাষ নেই। দেশের সর্ববৃহৎ কৃত্রিমভাবে স্পিরুলিনার বাণিজ্যিক উৎপাদন হচ্ছে কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ীতে। ৭ জন উদ্যোক্তা যৌথভাবে স্পিরুলিনার বাণিজ্যিক চাষ শুরু করছেন। স্বপ্ন দেখছেন লাখ টাকা আয়ের। সবকিছু ঠিক থাকলে অধিক লাভবানের আশা তাদের।

ফুলবাড়ী এগ্রো কোম্পানি নামে একটি যৌথ প্রতিষ্ঠান স্পিরুলিনার বাণিজ্যিক চাষ হাতে নেয়। এখন পর্যন্ত তাদের খরচ সাড়ে তিন লাখ টাকা। কোম্পানিটি ২৪ হাজার লিটার পানিতে স্পিরুলিনা উৎপাদন করছে যা বাংলাদেশে প্রথম এতো বড় কৃত্রিমভাবে স্পিরুলিনার বাণিজ্যিক উৎপাদন।

স্পিরুলিনা সম্পর্কে প্রাথামিক ধারণা না থাকায় প্রথমবার ৫ কেজি স্পিরুলিনা হার্ভেস্টিং করার পর ১ কেজি নষ্ট হয়। ১টি হার্ভেস্টিং মেশিনের মাধ্যমে সারাদিনে ৫-৬ কেজি স্পিরুলিনা হার্ভেস্টিং করা যায়। হার্ভেস্টিং মেশিনের অভাবে ঠিকমত স্পিরুলিনার হার্ভেস্টিং ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত লোকবলের অভাবও রয়েছে। স্পিরুলিনার প্রসারে নিয়মিত পরামর্শ দেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আ প ম জামাল উদ্দিন।

সমুদ্রের শৈবাল (স্পিরুলিনা) চাষ করে এরই মধ্যে সাড়া ফেলেছেন সেলিম, মাসুদ ও জাকির হোসেনরা। বাড়ির পরিত্যক্ত ধানের চাতালে বর্তমানে ২৪ হাজার লিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন জলাধার রয়েছে। এটি তাদের তৈরি করা। এখানেই বাণিজ্যিকভাবে চলছে স্পিরুলিনার চাষ। গত ৫ এপ্রিল থেকে স্পিরুলিনার আহরণ শুরু হয়েছে।

স্পিরুলিনার চাহিদা দেশের বাজারে বেড়েই চলছে। সে বিবেচনায় স্পিরুলিনার বাণিজ্যিক উৎপাদন নেই। স্পিরুলিনার যোগান মেটাতে দেশের নাম করা ঔষুধ কোম্পানি গুলোকে বাইরের দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশে স্পিরুলিনার চাষ হলে আমদানি নির্ভরতা কমে যাবে। বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

স্পিরুলিনা সামুদ্রিক শৈবাল। স্পিরুলিনা বাংলাদেশে গ্ৰিন ডায়মন্ড নামে পরিচিত। স্পিরুলিনা হলো অতি ক্ষুদ্র নীলাভ সবুজ শৈবাল যা সূর্যালোকের মাধ্যমে দেহের প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন করে যা বাংলাদেশ গোল্ডেন হিরা নামেও বেশ পরিচিত।

এটি সাধারণত জলে জন্মায়। সামুদ্রিক শৈবাল নামেই এর বেশি পরিচিতি। বর্তমানে কৃত্রিম জলাধারে এর বাণিজ্যিক উৎপাদন হচ্ছে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন, লৌহ ও একাধিক খনিজ পদার্থ। তাই অনেকে স্পিরুলিনাকে সুপার ফুড বলে থাকেন।

সাধারণ খাদ্য হিসেবে নানা রোগ নিরাময়ে মুল্যবান ভেষজ হিসেবে দেশে-বিদেশে স্পিরুলিনার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। স্পিরুলিনা একটি শক্তিবর্ধক সম্পূরক খাদ্য। প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলস সমৃদ্ধ প্রকৃতির আশ্চর্য খাবার স্পিরুলিনা।

স্পিরুলিনার গুণাগুণ অনেক। বিশেষ করে প্রচুর ভিটামিন, লৌহ ও নীলাভ সবুজ রং থাকার কারণে স্পিরুলিনায় রয়েছে নানা ধরনের রোগ প্রতিরোধের উপাদান। স্বাদ ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন স্পিরুলিনা নিয়মিত সেবন করলে দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে পুষ্টিহীনতা, রক্তশূন্যতা, রাতকানা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, আলসার, বাত, হেপাটাইটিস ও ক্লান্তি দূর হবে।

স্পিরুলিনার ক্ষয়ক্ষতি ও কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। স্পিরুলিনা হল সুতার মত ভাসমান ক্ষুদ্র শৈবাল যা ক্ষারীয় পানিতে জন্মে। অনেক শতাব্দী ধরে মধ্য আফ্রিকায় এটি খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে কারণ এর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। এখন খাদ্য হিসেবে স্পিরুলিনা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। স্পিরুলিনা গুড়ো, ফ্লেক্স বা ট্যাবলেট আকারেও পাওয়া যায়।
স্পিরুলিনা গুড়ো এবং ফ্লেক্সগুলোকেষ সাধারণত জুস এবং স্মুদির সাথে খাওয়া হয়। অনিয়ন্ত্রিতভাবে খেলে স্পিরুলিনা শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

যৌথ উদ্যোক্তাদের একজন সেলিম রেজা। তিনি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্পিরুলিনার উপর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত। তিনি জানান, সপ্তাহে ২৪ হাজার লিটার পানি থেকে সপ্তাহে উৎপাদন হচ্ছে ২৪ কেজি স্পিরুলিনা। যার বাজার মুল্য প্রতি কেজি ৫ হাজার থেকে ৩২ টাকা দামে বিক্রি করা হয়। একবছরে স্পিরুলিনা উৎপাদন বাবদ ব্যয় হয়েছে তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা। সবকিছু ঠিক থাকলে স্পিরুলিনা উৎপাদন করে এগারো লক্ষ টাকা আয় হবে বলে ধারণা করছেন তারা।

তিনি আরো জানান, অনেক জিনিস আছে যেগুলো আমরা বিদেশ থেকে আমদানি করে দেশের চাহিদা মেটাতে হয়। আমরা চাই দেশে উৎপাদন করে বেকার সমস্যার সমাধান করতে। বেকার যুবকরা চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেরাই উদ্যোক্তা হলে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। দেশেই উৎপাদন হলে‌ সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান, বাঁচবে বৈদেশিক মুদ্রা । এবার লাভবান হলে আরও বড় পরিসরে করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।

বিসিএসআইআর-এর বিজ্ঞানীরা ৬০ জন আর্সেনিকোসিস রোগীর উপর স্পিরুলিনা নিয়ে গবেষণা চালান। গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতিদিন ১০ গ্রাম করে স্পিরুলিনা খাওয়ালে প্রায় ৪ মাস পর রোগী সম্পূর্ণরূপে সুস্থ হয়ে উঠে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

প্রকাশনা

সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি : মোঃ এনামুল হক

উপদেষ্টা সম্পাদক: মোঃ মোজাহার হোসেন

প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ নাহিদুল ইসলাম

বার্তা সম্পাদক: সি. আই মামুন

নির্বাহী সম্পাদক:

ব্যবস্থাপনা সম্পাদক:

© All rights reserved © 2024 কুড়িগ্রাম প্রতিদিন
Theme Customized By BreakingNews