মনজুর রহমান ইশা, সংবাদদাতাঃ
প্রখ্যাত ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল গত ২৯ নভেম্বর ২০২০ ইং রবিবার আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না…..রাজিউন)। তাঁর মৃত্যুর খবর এখনও কোথা্ও প্রকাশ হয়নি। তাঁর প্রিয়জন কিংবা কাছের অনেক মানুষই এ খবর জানে না। তিনি যখন খুবই অসুস্থ ছিলেন তাঁর খবর তাঁর নাতির কাছে থেকে জানতাম। কিন্তু তার মৃত্যুর পর থেকে তার ফোনে যোগাযোগ করলেও কেউ আর ফোন ধরেনি।মৃত্যুর ৯দিন পর তার খবর জানতে গিয়ে জানতে পারলাম তিনি সবাইকে কাঁদিয়ে নিরবে না ফেরার দেশে চলে গেলেন। যখনই তাকে যেখানে ডাকতাম কোন প্রশন্ না করেই সে অনুষ্ঠানে ছুটে আসতেন।অনেক স্নেহ করতেন আমাকে। সে প্রিয় শ্রদ্ধাভাজন মানুষটির জানাযা ও কবরের কাছে যেতে না পারার কষ্ট হয়ত আ-মৃত্যু বহন করতে হবে।
তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ‘রাস্ট্র ভাষা বাংলা চাই’ দাবিতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মীদের পাশাপাশি আব্দুল জলিল ও তার বন্ধুরা মিলে সেদিন বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নিহত হন রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার, সালাম সহ ৮জন। অনেকেই আহত হন। সেদিন ভাগ্যগুণে বেঁচে যাওয়াদের মধ্যে ছিলেন আব্দুল জলিল।
১৯৩২ সালের ১৭ ডিসেম্বর নোয়াখালীতে জন্ম। বাবা আলহাজ্ব মোহাম্মদ শামসুল হক ছিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের কনফিডেন্টসিয়াল অ্যাসিসট্যান্ট টু দি গভর্নমেন্টের একান্ত সচিব। কথা প্রসঙ্গে এই বীর বাঙালী জানালেন, ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ তার বাবা সর্বপ্রথম পাকিস্তান সরকার হতে প্রাপ্ত মেডেল ফেরত দেন। যা ছিল সেই সময়ের বেশ সাহসী পদক্ষেপ। বিষয়টি বরাবরই ভাষা সৈণিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিলকে গৌরবান্বিত করে বলে জানান তিনি।
বার্ধক্যের কারণে বেশিরভাগ সময়ই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এই বীর বাঙালী। জীবন সায়ান্নের ৮৭ বছর বয়সে এসেও মাটি ও সবুজের প্রতি ভালোবাসা ছিল অকৃত্রিম। তিনি আর ফিরবেন না। কিন্তু তার দেশপ্রেম ও মাটির প্রতি যে ভালবাসা ছিল তা আমাদের জন্য অনুসরনীয় ও করনীয়। আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করুক।
Leave a Reply