রফিকুল হাসান রনজু, ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
ভূরুঙ্গামারীতে বিলুপ্তির পথে কাউজ চাষ।এক সময় উপজেলার দশটি ইউনিয়নের গ্রামেগঞ্জে ব্যাপক চাষ হলেও বর্তমানে কাউন চাষে কৃষকের আগ্রহ না থাকায় হারিয়ে যেতে বসেছে কাউন।
স্বল্প খরচ, সহজ চাষ পদ্ধতি ও পানি সাশ্রয়ী হওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঠিক তদারকির অভাবে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এই ফসলটি আজ বিলুপ্তির পথে। এমনকি উপজেলায় কাউন চাষের কোন তথ্য নেই কৃষি কর্মকর্তার দপ্তরে। ফসলটি যেন কালের গর্ভে বিলীন হতে চলেছে। সুস্বাদু একটি ফসলের নাম কাউন। মানুষজন কাউন চালের সঙ্গে রান্না করে খায়, হরেক রকমের পিঠা ,খীর, পায়েস , খিচুরী , মলাসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী তৈরি হতো কাউন থেকে। ফসলটির শুকনো জমিতে ঝুরঝুরে চাষের পর চৈত্র মাসে বীজ ছিটিয়ে বপন করতে হয়। জৈষ্ঠ্য- আষাঢ় মাসে ফসল ঘরে ওঠে । এতে কোন সেচের প্রয়োজন হয় না। ফলন হয় বিঘাপ্রতি ৮-১০ মণ। কাউনের শীষ ছিঁড়ে নিয়ে যাওয়ার পর বাকি গাছের অংশ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য আবাদের মতোই কাউন সহযোগী ফসল হিসেবে কৃষকের আর্থিক যোগান দিতো।
উপজেলার পশ্চিম ছাট গোপাল পুর গ্রামের কৃষক জয়নাল বলেন, আমাদের এই গ্রামে সবাই মরিচ, আলু , সাকসবজির ফাকে কাউন চাষ করতো । সেই কাউন বিক্রি করে সংসারের খরচ চালাতাম। এখন ফলন কম হওয়ায় আমরা কাউন চাষ আর করি না।
এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে কথা বললে তারা জানান, দেশী জাতের এ ফসলটিকে আমাদের স্বার্থেই সংরক্ষণ করা উচিত।তা না হলে পরবর্তী প্রজন্ম জানতেই পারবে না কাউন নামটি। কাউন নামের এ ফসলটি যাতে বিলুপ্ত হয়ে না যায় এ জন্য সবার এগিয়ে আসা উচিত বলে এলাকাবাসী মনে করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান,কাউন এখন অভিজাত ফসল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তা ছাড়া ফলন কম হওয়ায় কৃষকেরা কাউন চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলায় কৃষি অফিসে তথ্য নাই।