1. nahidbd6969@gmail.com : kurigrampratidin :
  2. 123@kurigrampratidin.com : itsme :
মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েও তামান্নার মুখে হতাশার ছাপ - কুড়িগ্রাম প্রতিদিন
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৮ অপরাহ্ন

মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েও তামান্নার মুখে হতাশার ছাপ

  • Update Time : বুধবার, ৭ এপ্রিল, ২০২১
  • ৫৪ Time View

মোঃ মেছবাহুল আলম, বিশেষ প্রতিনিধিঃ

মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েও অনিশ্চিয়তায় দিন কাটছে তারজিনা আক্তার তামান্নার। সে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বেলদহ গ্রামের তারা মিয়ার মেয়ে। তামান্না এবার রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। গত ২ এপ্রিল (শুক্রবার) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস এর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৪ এপ্রিল রোববার বিকেলে ঘোষিত ফলাফলে তামান্না টেস্ট স্কোর ৭১.৫ এবং মেরিট স্কোর ২৭১.৫ পেয়ে মেধা তালিকায় ২২৬৭ নম্বরে স্থান পায় । তামান্না জয়মনিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ ও ভূরুঙ্গামারী মহিলা ডিগ্রী কলেজ থেকে ২০২০ সালে এইচ এস সিতে গোল্ডেন জিপিএ পায়।

তামান্নার বাবা তারামিয়া জানান, বাড়ির ভিটে টুকু ছাড়া চাষাবাদ করার মতো কোন জমি নেই তার। সংসার চালাতে ভ্যানগাড়ীতে করে বিভিন্ন হাট বাজারে কাপড় ফেরি করে বিক্রি করেন তিনি। তা দিয়ে কোন মতে সংসার চললেও সঞ্চয় বলতে কিছু নেই। মেয়ের লেখা পড়ার খরচ চালাতে আরডিআরএস নামক একটি এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। মেয়ে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়ায় ২ বছরের জন্য ঐ এনজিওটি ২৪ হাজার টাকা বৃত্তি প্রদান করে। বৃত্তির টাকা খরচ না করে সেই টাকা দিয়ে মেয়েকে রেটিনা কোচিং সেন্টারে ভর্তি করান। মেয়ের অনলাইনে ক্লাশ করার জন্য মালয়েশিয়া প্রবাসী তার এক পরিচিত ব্যক্তি তাকে একটি মোবাইল ফোন কিনে দেন। সেই মোবাইল ফোন দিয়ে অনলাইনে ক্লাশ করে মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে তামান্না।

দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া দুই বোনের মধ্যে বড় তামান্না। দারিদ্র্যকে জয় করে, অজপাড়া গাঁ থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দুরের হাইস্কুল এবং সাত কিলোমিটার দুরের কলেজে হেটে গিয়ে ক্লাশ করা তামান্না মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় পরিবারে পাশাপাশি গ্রামবাসির মাঝে আনন্দের বন্যা বইলেও ভর্তি হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। তামান্নার দরিদ্র বাবার কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।

তামান্না বলেন মেডিকেলে ভর্তি সুযোগ পেয়ে খুব খুশি হয়েছিলাম কিন্তু সেই সুখানুভ‚তি হারিয়ে এখন বাবার চিন্তক্লিষ্ট দুশ্চিন্তাগ্রস্থ মুখটা দেখে খুব কষ্ট হচ্ছে, মনে হচ্ছে আমাদের মত দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েদের এমন সুযোগ পাওয়া উচিৎ নয়। তার চোখেমুখে হতাশার ছাপ। কারণ ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় স্থান হলেও দারিদ্র্যের বাধা অতিক্রম করে মেডিকেলে ভর্তি হওয়াটা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে তার জন্য। তার এ সাফল্যে বাবা-মার পর স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে সে। তাদের সহযোগিতা আর উৎসাহে সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে বলে সে জানায়। তামান্না ভালো মানের চিকিৎসক হয়ে দারিদ্র পিড়ীত মানুষের সেবা করতে চায়।

তামান্নার মা লাইলি বেগম বলেন, তাদের মাঠে কোনো জমি নেই। শুধু ভিটেটুকু আছে। স্বামীর সামান্য আয়ে কোনো রকমে সংসার চলে। মেডিকেলে ভর্তি ফি, কংকাল কেনা ও অন্যান্য ও আনুসঙ্গিক খরচ বাবদ নগদ প্রায় ৯০ হাজার টাকার প্রয়োজন। যা তাদের পক্ষে যোগার করা প্রায় অসম্ভব। এ অবস্থায় মেয়ে কীভাবে ডাক্তারি পড়বে তা তারা ভাবতে পারছেন না।

ভূরুঙ্গামারী মহিলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ খালেকুজ্জামান বলেন, মেয়েটি মেধাবী এবং অসম্ভব পরিশ্রমী। কলেজে পড়ার সময় আমরা তাকে বিভিন্ন ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছি। এমন এক প্রতিভা যেন দারিদ্রের কষাঘাতে হারিয়ে না যায় সে জন্য তিনি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

প্রকাশনা

সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি : মোঃ এনামুল হক

উপদেষ্টা সম্পাদক: মোঃ মোজাহার হোসেন

প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ নাহিদুল ইসলাম

বার্তা সম্পাদক: সি. আই মামুন

নির্বাহী সম্পাদক:

ব্যবস্থাপনা সম্পাদক:

© All rights reserved © 2024 কুড়িগ্রাম প্রতিদিন
Theme Customized By BreakingNews